BMV-24 MR. AJIT DOVAL -“Man’s greatness lies in his power of thought”-Blaise Pascal
An Introduction of Mr. Ajit Doval
বুদ্ধিমত্তা ও গুপ্তচর বৃত্তির জন্য ইনি ছিলেন এককালে পৃথিবীর কাছে এক ত্রাস সৃষ্টি করা ভারতীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর উপস্থিতি যে কোনো দেশের ক্ষেত্রে একটা গোপন সতর্কতা এনে দিত, হয়তো সেই দেশের সমস্ত গোপন তথ্য মুহূর্তেই ফাঁস হয়ে যেতে পারে নিমেষেই।
কৌটিল্যর অর্থশাস্ত্র বিশারদ, আর বর্তমান ভারতবর্ষের চাণক্যর নীতির জনক বললেও যাঁর সম্বন্ধে অত্যুক্তি হবে না, প্রশাসনের এক নির্ভরযোগ্য ও ভরসার একমাত্র স্তম্ভের আরেক নাম অজিত দোভাল।
1945 সালে 20শে জানুয়ারী উত্তরাখন্ডের পাউরি গড়ওয়াল প্রদেশে জন্ম।পড়াশুনো রাষ্ট্রীয় মিলিটারি স্কুল আজমের থেকে। পরবর্তীকালে যোগ দেন পুলিশ বিভাগে IPS অফিসার হিসেবে।বর্তমানে উনি পঞ্চম NATIONAL SECURITY ADVISOR OF INDIA।2004-2005 সালে Director of Intelligence Bureau পদে অধীনস্থ থাকেন।
একজন অতি বিচক্ষন ও যেকোনো ধরণের গুপ্তচরের কাজে এতই পটু ছিলেন যে তাঁর সমস্ত কাজের দায়ভার ও রিপোর্ট প্রথম থেকেই সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নিজে দেখভাল করতেন।
মোরারজী দেশাই, ইন্দিরা গান্ধী, মনমোহন সিং, বর্তমানে নরেন্দ্র মোদী যখনই যাঁর সময় দেশে সংকটের ও আপৎকালীন পরিস্থিতি এসে পড়েছে প্রত্যেকের পাশে এক স্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়েছেন এই অজিত দোভাল।আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন কি তাঁর সেই দক্ষতার কথা যা আজও প্রত্যেকটা ভারতীয়ের কাছে এক নজির সৃষ্টি করে গেছেন।
কাল্পনিক চরিত্র james Bond যাঁর কথা প্রত্যেকের মুখে মুখে চলে এসেছে এতকাল, অজিত দোভাল ও কোনো অংশে কম নন।যাঁর ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রীর পর যদি কেউ থাকেন তিনি হলেন অজিত দোভাল।পাকিস্তানের বিদেশ সচিব, রক্ষা মন্ত্রী, সেনা প্রধান সকলের কাছে এক ত্রাস সৃষ্টিকারী ব্যক্তিত্ব।
1972 Mizoram- Lal Denga attacking plan
সেই সময় প্রায় প্রতিটা প্রদেশে ভিন্ন ভিন্ন রাজ্য গঠনের জন্য একটা চরম অরাজকতা ও অশান্তি চালাচ্ছে তাঁর মধ্যে মিজোরামে লাল ডেঙ্গা সম্প্রদায় মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে।হাতিমতাইয়ের ক্ষমতা যেমন টিয়া পাখির মধ্যে ছিল,
ঠিক তেমনই লাল ডেঙ্গার ক্ষমতা ছিল সাতজন কমান্ডারের অঙ্গুলিহেলনে,তাঁরাই এই সন্ত্রাস চালাতো মিজোরাম থেকে। অজিত দোভাল সেখানে যান ও প্রত্যেকটা কমান্ডারদের সাথে প্রতিদিন আলাদা আলাদা করে নৈশভোজে আমন্ত্রিত করেন, এমনকি সুরাপানেও মত্ত করে দেন তাঁদের কে, তাঁদের সমস্যার কথা শোনেন, এমন ভাবে কথার দ্বারা তাঁদের কে আপন করে নিতে পারতেন।
একটা সময় প্রতিপক্ষকেও মনে করতে বাধ্য করতেন দোভাল যে তিনি তাঁদেরই খুব কাছের লোক।লাল ডেঙ্গার কমান্ডোর দের বোঝাতে থাকেন তোমাদের মিজোরামের সমস্ত ক্ষমতা তোমাদেরই থাকবে,প্রত্যেক কমান্ডোরদের আলাদা আলাদা মন্ত্রী, যা যা সুবিধে পাওয়ার সমস্তটাই দেওয়া হবে,দেশে যত সমস্ত ক্রিমিনাল চার্জ আছে পুরোটাই মকুব করে দেওয়া হবে।
এতটাই নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠলেন দোভাল তাঁদের কাছে ছয়জন তাঁর কথাই হ্যাঁ তে হ্যাঁ মেলালেন, বাকি একজন যিনি এলেন না তাঁকে মিজোরামের শত্রু ঘোষণা করে তাঁদের মধ্যেই সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিলেন। এতে লালডেঙ্গা পার্টি সকল সুবিধে তো পেলেন কিন্তু ক্ষমতায় দুর্বল হয়ে পড়লো আর মিজোরাম আলাদা রাজ্য হওয়া থেকে মাথাচাড়া দিতে বিরত থাকলো।
Sikkim administration was dominated by Mr. Doval
সিকিম ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ, সেখানকার রাজা একজন আমেরিকান মহিলা কে বিয়ে করেন যিনি নাকি CIA র এজেন্ট ছিলেন।মহিলাটি CIA র এজেন্ট হওয়াতে ভারতের সমস্ত অভ্যন্তরীন তথ্য আমেরিকাতে পাচার করছিলেন।
মহিলাটি এমনকি চীনকেও সাহায্য করছিলো ভারতের সমস্ত তথ্য পাচার করে ।সিকিমের সেই সময় একটাই পার্টি বহাল ছিল সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি, অজিত দোভাল সেখানে যান আর প্রথমেই তাঁদের সাথে বৈঠক করেন।
তাঁদের অসুবিধের কথা মন দিয়ে শোনেন ও প্রতিশ্রুতি দেন তাঁদের সমস্ত সুযোগ সুবিধে পাইয়ে দেবেন যা থেকে সিকিমের মানুষজন অবহেলিত।আরো একটা মহৎ উদ্দেশ্যের কথা সিকিম ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির প্রধানমন্ত্রীর সাথে করেন আর সেখানকার রাজার সাথেই একটা বিবাদ লাগিয়ে দেন।
রাজা ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নেন এই পার্টিকে সমূলে উৎখাত করবেন, কিন্ত সিকিমের রাজা সেটা প্রস্তুতি নেওয়ার আগেই সিকিমের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর শরণাপন্ন হন সাহায্যের আশায়।
যেহেতু বহু আগেই ডোভাল একটা ছক কষে ফেলেছিলেন সিকিম সম্বন্ধে, তাই ডোভালের নির্দেশনায় ইন্দিরা গান্ধী সেখানে সেনা পাঠিয়ে রাজাকে ঘিরে ফেলেন ও পুরোপুরি রাজা পর্যুদস্ত হন ভারত সরকারের ক্ষমতার কাছে।তাই সিকিম এখন ভারতের অঙ্গরাজ্য সেটা একমাত্র সম্ভব হয়েছে অজিত ডোভালের নেতৃত্বেই।
Destroying the Nulear Bomb strategic plan
মোরারজী দেশাই প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন ভারত সরকারের কাছে একটা উড়ো ও সন্দেহজনক খবর আসে যে পাকিস্তান নিউক্লিয়ার বোম বানানোর কাজে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অজিত ডোভালের ডাক আসে পাকিস্তানে যাওয়ার একটা যথোপযুক্ত তথ্য সংগ্রহ করার।
উনি সেখানে যান ও দীর্ঘদিন কাটান এক ভিখারির বেশে। রপ্ত করে ফেলেন পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর গুপ্ত সমস্ত খবর ও কিছুটা হলেও সত্যতা খুঁজে পান। পাকিস্তানের কাহটা নামের এক জায়গার সেখানে খান রিসার্চ সেন্টার, যাঁর নেতৃত্বে ছিলেন পাকিস্তানের বৈজ্ঞানিক ইয়াকুব খান।
পুরোমাত্রায় ভিখারির বেশে আস্তানা বাঁধেন ঠিক এই রিসার্চ সেন্টারের কাছাকাছি। একটা তদারকি শুরু করে দেন কে কখন আসছে, কখন বের হচ্ছেন সেই রিসার্চ সেন্টার থেকে।
অবিরাম পরিশ্রম ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন ভিখারী ডোভাল।
যে কোনো বিজ্ঞানীর শরীরের সামান্য অপ্রয়োজনীয় অংশ যদি যোগাড় করা সম্ভবপর হয় যেমন মাথার চুল, হাতে বা পায়ের নখ কারণ তেজষ্ক্রিয় পদার্থ থেকে নিঃসৃত ray কোনো না কোনো ভাবে চুল ও নখ পরীক্ষা করলে অবশ্যই পাওয়া সম্ভব।
তাই প্রচেষ্টা চলে বৈজ্ঞানীকেরা কোথায় চুল কাটতে যান কারণ সেখানেই ভিখিরির বেশে ডেরা পাততে হবে। মুহূর্তে এই মানসিক প্রস্তুতির একটা জায়গা তৈরী করে ফেলেন ও বৈজ্ঞানিকদের মাথার চুল যোগাড় করে ফেলেন চুল কাটার সেলুন থেকে।আর সেটা ভারতের ডিফেন্স পরীক্ষাগারে পাঠিয়ে দেন।
কোনো ভাবে যেন ধরা না পড়েন তাই ভাষা সম্বন্ধে একটা সম্যক জ্ঞান ও তালিম নেন উর্দু ও আরবি ভাষা শেখার। যখন এটা ভারতীয় পরীক্ষাগারে প্রমাণিত হয় উনি তৎক্ষণাৎ ভারতে ফিরে আসেন ও মোরারজী দেশাইকে আশ্বস্ত করেন পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য।
মোরারজী দেশাই ছিলেন গান্ধী নীতির অনুরাগী তাই উনি বিশেষ কর্ণপাত করেননি ডোভাল সাহেবের কথায়। এতে ডোভাল খুবই অসন্তুষ্ট হন এত পরিশ্রম এত গোপন তথ্য সমস্তটাই মাঠে মারা পড়লো।
ডোভাল চেয়েছিলেন সেই সময় ইজরায়েলের সাথে পাকিস্তানের কূটনীতিক সম্পর্ক মোটেই ভালো ছিল না তাই যদি ইজরায়েল কে পাকিস্তানের এই গোপন তথ্য জানানো যায় একমাত্র তবেই খান রিসার্চ সেন্টার কে ওড়ানো সম্ভব ও পাকিস্তানের প্রকল্প সমূলে উপড়ে ফেলা সম্ভব।
মোরারজী দেশাইয়ের নেতিবাচক সিদ্ধান্ত ডোভাল কে একেবারে মুষড়ে দিয়েছিলো। উনি আবারও পাকিস্তান যান সেখানে এক বৈজ্ঞানিকের একটা গোপন তথ্য জানতে পারেন যে উনি কোনো মহিলার সাথে শারীরিক সম্পর্কে যুক্ত। ব্যস শুরু হয় blackmailing করা তাঁকে। হয় তুমি এই খান সেন্টারের ব্লু প্রিন্ট আমাকে দাও তা নাহলে তোমার কীর্তিকলাপ পাকিস্তানের লোকজনের কাছে ফাঁস করে দেবো।
উনি চাপের মধ্যে পরে রাজি তো হন কিন্ত একটা শর্ত রাখেন অজিত ডোভালের সামনে। দিতে পারি সমস্ত ব্লু প্রিন্ট যদি তুমি আমাকে দশ হাজার ডলার দাও, তাহলে আমি পাকিস্তান ছেড়ে বাকি জীবন কাটিয়ে দেবো অন্য দেশে গিয়ে নিজের পরিবারের সাথে। কিন্ত মোরারজী দেশাই মানলেন না।
তাঁকে বোঝানো হোলো এই ব্লু প্রিন্ট পেলে ভারত সমস্ত তথ্য পাকিস্তান সম্বন্ধে জানতে পারবে আগামীদিনে, কিন্তু কে কার কথা শোনে।IB চিফ তাঁর এই অরাজি তে খুবই দুঃখ পেলেন ও ইস্তফা দিলেন।মোরারজী দেশাইয়ের বোকামি প্রকাশ পেল কিছুদিন পরেই যখন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধান জিয়া উল হক মোরারজী দেশাইকে ফোন করেন এক কুশল বিনিয়ম কথা বার্তার মাধ্যমে।
মোরারজী দেশাই সমস্ত খবর তাঁকে বলে দেন তাঁদের খান রিসার্চ সেন্টার সম্বন্ধে। জিয়া উল হক চমকে উঠলেন এত বড় গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার জন্য। উনি পরের দিনই পাকিস্তানে ভারতীয় চরেদের খোঁজা শুরুর কথা ঘোষণা করেন। এতে বহু IB ও RAW অফিসার ধরা তো পড়লেনই মারা পড়লেন পাকিস্তানের হাতে। অজিত ডোভাল এটা আগেই বুঝেছিলেন তাই কোনো ভাবে ভারতে চলে আসেন।
Golden Temple Amritsar -Planning & Strategy
1984 সালে operation blue star স্বর্ণমন্দিরে এক দল উগ্রপন্থীর হানায় প্রচুর শিখ সম্প্রদায় ও সাধারণ মানুষ মারা যান। KPS GILL তখন পাঞ্জাবের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার। উনি নিজেও হার মানেন পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলায়, সেই সময় অজিত দোভালের ডাক আসে স্বর্ণমন্দির কে বাঁচাতে হবে উগ্রপন্থীদের হাত থেকে।
পৌঁছে যান ডাক আসার আগেই সেখানে এক রিকশাচালকের বেশে । সারাটা স্বর্ণমন্দির ঘুরতে থাকেন চারিপাশে ইচ্ছে করে যাতে উগ্রপন্থীদের কটাক্ষ সন্দেহের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
ধরা পড়েন, উগ্রপন্থীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর উনি তাঁদের কাছে বিশ্বাস জন্মান যে উনি নিজেই একজন পাকিস্তানী গুপ্তচর, একজন এজেন্ট, এসেছেন তাঁদেরকে সাহায্য করতে। টাকা পয়সা, অস্ত্র বারুদ সমস্তটাই নিয়ে আসবে এক অজানা জায়গায় রিকশার মাধ্যমে।
এতে উগ্রপন্থীরা কোনো ভাবেই তাঁকে বিশ্বাস করতে পারেন না। শেষে বিশ্বাস জন্মানোর জন্য শুরু করেন উর্দু ও আরবি ভাষা বলতে যা অজিত ডোভাল বহু আগেই তালিম নিয়েছিলেন পাকিস্তানে থাকাকালীন।বিশ্বাস হয়ে ওঠে ডোভালের উপর আর শুরু করে তাদের প্ল্যান,কি কি ভাবে আক্রমণ হবে, কতক্ষন সময়ে প্রথম কোন স্থান থেকে আক্রমণ শুরু হবে, একেবারে রননীতির সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা।
ডোভাল নিজেও তাঁদের নীতির সঠিক উপদেষ্টা কর্মী হয়ে পড়েন।যেমন কাজ তেমন সংকল্প। রাতারাতি বৈঠক করেন ভারতীয় কমান্ডো বাহিনীর সাথে খুবই গোপনীয়তার সাথে ও সম্পূর্ণ প্ল্যানিং বুঝিয়ে দেন, ঠিক কি ভাবে এই operation blue star চালাতে হবে।
প্রসঙ্গত বলা দরকার উনার প্ল্যানিং এতই নিখুঁত ছিল যে সঠিক সময়ে সমস্ত উগ্রপন্থীরা মারা যান কমান্ডো বাহিনীর কাছে। একজন কমান্ডো পর্যন্ত এতটুকু আহত হননি এই blue star operation এ।
Kukka Parey famous singer acts as a spy
জম্মু ও কাশ্মীরের নির্বাচন কিছুতেই সম্ভবপর হচ্ছিলো না সেই সময় কুক্কা পারে নামে একজন যেমন গায়ক হিসেবে সাফল্য পেয়েছিলেন ভারতে, তেমনই পাকিস্তানের চর হিসেবে সন্ত্রাস ছড়াতেন জম্মু কাশ্মীর উপত্যকায়।
এমনিতেই মৃদুভাসি গায়ক কিন্ত একজন বিষধর সাপ, যে নাকি প্রায় তাঁর আড়াইশো সাকরেদদের নিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতেন। কোনো কাশ্মীরির তাঁর প্রতি সন্দেহ হলেই তার আগেই সাকরেদরা তাঁকে শেষ করে দিতেন,কুক্কা পারের সামনে যাওয়া তো দুরস্ত।
অজিত ডোভাল যান তাঁর সাথে দেখা করতে এক একান্ত আলাপচারিতায় তাঁকে উৎসাহিত করেন তাঁর গানের সুখ্যাতির সম্বন্ধে। প্রস্তাব রাখেন পাকিস্তান আপনাকে যা যা সুযোগ সুবিধে দিয়ে থাকে তার অনেক গুণ সুবিধে ভারত সরকার তাঁকে দিতে পারে, এমনকি তাঁকে MLA হতেও সাহায্য করতে পারে ভারত।
শুধু নির্বাচন হোক শান্তিপূর্ণ ভাবে আর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই নির্বাচনের যে বাঁধা আসুক কুক্কা পারে যেন একাই সামলে নেন। সেই বছর প্রচুর পাকিস্তানী উগ্রপন্থী মারা যান কুক্কা পারের সহযোগিতায়।পাকিস্তান কে চমক লাগিয়ে দেন তাঁর এই অসামান্য বুদ্ধিমত্তার কাছে।
IC 814 Hijack, Kandahar strategy
নেপাল থেকে দিল্লী আগমনরত প্লেন যা জঙ্গিদের হাতে লুট হয়ে যায় ও আফগানিস্তানের কান্দাহারে সমস্ত যাত্রীদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
উদ্দেশ্য একটাই ভারতে আটক পঁয়ত্রিশ জন উগ্রপন্থীদের ছেড়ে দিতে হবে, আর দুশো কোটি ডলার দিতে হবে আর তাঁদের পক্ষ থেকে সময় দেওয়া হয় মাত্র চব্বিশ ঘন্টা নচেৎ সমস্ত যাত্রীদের মেরে ফেলা হবে।
আবারও অজিত ডোভালের ডাক আসে এই কাজে, তাঁর বুদ্ধিমত্তা ও যথোপযুক্ত ভাবে যেন কার্যভার গ্রহণ করেন।অজিত ডোভাল যেটা করেন প্রথমেই সমস্ত দেশের বিদেশ মন্ত্রকের কাছে এক আর্জি যেন তাঁরা ফোনের পর ফোন করে পাকিস্তানকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলেন ও সময়সীমা যাতে আরো বাড়ানো সম্ভব।
এমন চাপে পাকিস্তান নিজেও বুঝে যায় এই ঘটনার নেতৃত্ব করছে ভারতের অজিত ডোভাল। পাকিস্তানের কথামত উগ্রপন্থীরা অজিত ডোভালের সাথে সংযোগ স্থাপন করেন ততক্ষনে উনি নিজেই পৌঁছে যান কান্দাহারে।যখনই উগ্রপন্থীরা টাকার কথা বলেন উনি বলেন হয়তো যাত্রীদের তোমরা মেরে দেবে কিন্তু কিছু কি পাবে? না টাকা না ভারতে বন্দী উগ্রপন্থী- কোনোটাই নয়, তাই সময়সীমা আরো বাড়াও।
শুরু হয় সমঝোতা আর দর কষাকষির পালা আর পাকিস্তানের উপর অন্য রাষ্ট্রের চাপ প্রতিনিয়ত। ঠিক হয় টাকা দেওয়া অসম্ভব কিন্ত একজন উগ্রপন্থীকে ছাড়া সম্ভব। এদিকে তাঁরাও নারাজ কমপক্ষে তিনজন কে তো ছাড়তেই হবে।
পাকিস্তানের উপর অন্য রাষ্ট্রের চাপ বাড়তে থাকে -যে তোমরা ভিখিরি নাকি এভাবে টাকা চাইছো এত তোমাদের দেশের পক্ষে লজ্জাজনক। এই সমস্ত কথা অজিত ডোভালের শেখানো অন্য রাষ্ট্রকে কারণ উনার সমস্ত দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাথে বরাবরই একটা সুসম্পর্ক ছিল।
পাকিস্তান বিপাকে, কি করবে? টাকা নিলে পরবর্তী সময়ে ভিখারী হিসেবে আখ্যা পাবে বাকি দেশের কাছে, এদিকে সময় ও চলে যাচ্ছে। শেষমেশ সম্মতি জানান ঠিক আছে একজনকেই ছাড়ুন তবেই আমরা এই কান্দাহারের থেকে প্লেন ছাড়ার অনুমতি দেবো। শেষমেশ ছাড়া হয় কুখ্যাত উগ্রপন্থী মাসুদ আজহার কে।
Pulwama attack, revenge on Surgical strike
পুলওয়ামা আক্রমণ -আমাদের সকলের মনে আছে, প্রচুর ভারতীয় সৈন্য মারা যান সেই আক্রমণে আনুমানিক আঠারো জন সৈনিক শহীদ হন। প্রতিশোধের বদলা প্রতিশোধ নিতে হয়।
এই পুলওয়ামা ঘটনার ঠিক এগারো দিনের মধ্যে ভারতীয় বায়ু ও স্থল সেনাদের নিয়ে বৈঠক করেন ও পাকিস্তানের LOC অতিক্রম করে আরো তিন কিলোমিটার ঢুকে পরে সমস্ত জঙ্গি ঘাঁটি বিধ্বস্ত করে, প্রায় 38 জন জঙ্গি কে শেষ করে ফিরে আসে।
এমন ঘটনায় যখন ভারতীয় বায়ুসেনা ফিরে আসতে থাকে তখন পাকিস্তান সেনা পেছন থেকে আক্রমণ শুরু করে, তা দেখে অভিনন্দন ভার্থীমান ঘুরে পাল্টা আক্রমণ করেন তাঁর mig 21 বিমান নিয়ে। পরে উনি আমরা সবাই জানি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে বন্দী হন।
একটা বহু প্রচলিত রীতি আছে কোনো সেনা যদি অন্য দেশে বন্দী হয়ে ধরা পরে তাহলে কোনো রকম তাঁর প্রতি শারীরিক নির্যাতন করা যাবে না।, এতে আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করা হবে। প্রয়োজনে তাঁর সে দেশে বিচার হতে পারে।
অভিনন্দন যখন প্যারাশুটে করে নামতে থাকেন তখন যদিও পাকিস্তানের মাটিতে পড়েন ও তাঁকে মারধর করা হয় যেটা আইন বহির্ভূত।
তাই ডোভাল একটা ছুঁতো পেয়ে যান সমস্ত রাষ্ট্রের কাছে আর্জি জানানোর, যেন তাঁকে তখনই হস্তান্তরিত করা হয় ভারতে। ইমরান খান নিজেও ব্যাপারটা তদারকি করেন ও শেষমেশ চাপ ও ভয় পেয়ে সম্মানের সাথে ভারতের হাতে তুলে দেন।
Awards won by Ajit Doval till date
এখনো পর্যন্ত যে সমস্ত পুরস্কারে তাঁকে ভূষিত করা হয় সেগুলি হোলো Kirti Chakra, Police medal, President’s police medal।এক চিন্তাভাবনা চলছে সমস্ত ভারতবাসীর মনে এই 76 বছরের বর্ষীয়ান মহানুভব মানুষটিকে যদি ভারতরত্ন দেওয়া হয়। আপনারও যদি একই মত থেকে থাকে নিশ্চয় জানাবেন কমেন্টস বক্সে।