BMV-2 KOLKATA DURGAPUJA 2020
কলকাতার দুর্গোপূজো 2020 ও যথার্থতা
Durga puja introduction
আমাদের প্রত্যেকের জানা মহালয়ার ঠিক সাতদিন পরে এই দুর্গোপূজোর শুভসূচনা। এবছর এই চরিত্রটা একদমই আলাদা। মহালয়ার দিন থেকে প্রায় পঁয়ত্রিশ দিন পরে এই দুর্গো পূজো। কারণটা প্রত্যেকের জানা নিশ্চয়। মল মাস বলে। আমরা জানি এই মল মাসে কোনো শুভ কাজ হয়না। যেহেতু আশ্বিন মাস মল মাস পড়েছে তাই পূজো এতটা পিছিয়ে। এবছরে কার্তিক মাসে তাই দুর্গো পূজো।
এবছর 2020, বাংলায় হোলো বিষ বিষ বছর। বছরের শুরু থেকেই একটা গোলমেলে। এমন এক মারণ রোগ করানো এসেছে যা আর কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না। তাই স্বয়ং মা উমাও এসেছেন দেরি করে কৈলাশ থেকে সঙ্গে ছেলেমেয়েদের নিয়ে।বড়ই দুর্ভাগ্য উনিও চান না হয়তো দেখা হোক সবার সাথে। তাই হয়তো নিয়ম রক্ষার্থে কেউ কেউ পূজো করছেন।
Durga puja celebration
কলকাতার দুর্গোপূজো মানেই মানুষের ঢল, তার সাথে সমান তালে পাল্লা দিয়ে চলে মণ্ডপসজ্জা। এটাই আমাদের পুরোনো রীতি রেওয়াজ যা বহু বছর ধরে চলে আসছে।একটা মেতে ওটা চার দিনের জন্য আপামর বাঙালীর কাছে। এবারে যে কথাটা বলবো হয়তো অনেকের ভালো লাগবে না সেটাই স্বাভাবিক। কারণ বছরের এই কয়েকটা দিনের দিকেই তো মানুষ তাকিয়ে থাকেন তাই না?
Durga puja as a Theme
সেখানে যদি নেতিবাচক কথা হয় বাঙালী কেনই বা মেনে নেবেন খুব সত্যি কথা। কত লোকের রুজি রোজগার এই চারটে দিনে সেটাও যদি বন্ধ হয়ে যায় তাঁরাই বা কোথায় যাবেন।প্যান্ডেলওয়ালা যাঁরা গ্রাম থেকে উঠে আসেন। শোলার কাজে যাঁরা পটু মায়ের সুসজ্জিত গহনা প্রস্তুতিতে, ঢাকীর ঢাক বাজানো থেকে বিরত সে সব লোকগুলো।
Santosh Dhaki এখানে ক্লিক করুন
এছাড়াও আরও অনেকে যাঁরা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত এই পুজোর সাথে। সত্যি তাঁদের কথা ভাবলে কষ্ট তো হয়ই। চলুন একবার ভাবি তাঁদের কথা। চারটে দিনের সাজসজ্জায় তাঁরা ধরে নেওয়া যাক যে বিপুল পরিমান অর্থ রোজগার করেন। সেটা দিয়ে কি তাঁদের সারাটা বছর চলে?কখনোই না।
Durga puja. ঢাকের তাল ও বিভিন্ন বোল
Durga puja a festival
কিছু না কিছু তাঁরা নিশ্চয় করেন তাই না। কিন্ত দুঃখের বিষয় এ বছরের প্রায় শুরু থেকেই সেটাও বন্ধ। কোথায় যাবেন তাঁরা, তাহলে কি তাঁদের খুশি করার জন্যই কি এই সামান্য পুজোর আয়োজন।ট্রেনের হকার, যে কোনো প্লাটফর্মে সারিসারি চায়ের দোকান, ছোটো বড় ষ্টল, প্লাটফর্মের ভিখিরির দল, মন্দিরে সারিবদ্ধ ভিখিরি, শপিং মলের ছাটাই কর্মী, ট্যাক্সি, বাস চালক কোথায় গেলো তারা মুহূর্তে? কি করছেন তাঁরা, এরা তো পরিযায়ী শ্রমিক নন,তাহলে?
Durga puja 2020 vs Corona effect
কি করছেন? তাঁদের দিনই বা চলছে কি ভাবে।পূজো কর্তৃপক্ষ একটুও কি ভেবেছেন তাদের কথা ? সরকার বলেছেন প্রায় বোধহয় 5000 কোটি টাকা RBI মারফৎ ঋণ দেওয়া হয়েছে সমস্ত ব্যাংক মারফৎ। এ ঘোষণা আনুমানিক চার মাস আগের।
তাও আবার সে ঋণ পরিশোধযোগ্য একবছর পর থেকে। যেকোনো সরকারী ব্যাংকে গিয়ে খোঁজ নিন তো ম্যানেজারের কাছে, সরাসরি তারা বলবেন কোন ধরণের সার্কুলার নেই। আসেই নি তাদের কাছে কোনো সার্কুলার এটা অবশ্য পশ্চিমবঙ্গের একটা চিত্র।
Corona alert in Durga puja
অথচ সেটা ঝাড়খণ্ডে শুনেছি ব্যাংক ডেকে ডেকে সে ঋণ দিচ্ছে।এবছরে প্রতিটি পূজো প্যান্ডেল 50,000/- টাকা অনুদান পাচ্ছেন। সরকারকে একটু কি নিবেদন করতে পারি, ভালো করছেন কি? অনেকে হয়তো রেগেও যাবেন আমার এই তির্যক উক্তিটিতে।যে রাজ্যে চূড়ান্ত অভাব আর কোরোনার জন্য মানুষের আর্থিক অবস্থা একেবারেই বিপর্যস্ত সেখানে কি শুধু এবছর টা আনন্দের তহবিলে টাকা না দিলেই নয়?
করুন না সে টাকা দিয়ে সারাটা মাস ধরে ভুরিভোজের আয়োজন। শিশুদের জন্য কাপড় চোপড়, এত করে ও অভাব হয়তো মেটানো যাবে না। চারিদিকের আর্থিক পরিস্থিতি যা । দেশের GDP কোথায় এসে দাঁড়িয়েছে? আরও হয়তো নিচে চলে যাবে এই পরিস্থিতিতে ।একটু তলিয়ে ভাবুন তো যাঁরা পূজো করছেন তারা ভাবছেন গরিব মানুষ গুলোকে গ্রাম থেকে তুলে এনে তাদের কাজ দিচ্ছেন যেহেতু তাঁরা কৃতি শিল্পী? কিন্তু কাদের স্বার্থে?
Durga puja and lockdown
বলটা কি তাঁদের উদ্দেশ্যে তাঁদের কোর্টেই ফেলা হোলো তাই না কি? একটু করোনা সুড়সুড়ি মাখিয়ে, আমরা তাঁদের কথা ভেবে একেবারে আপ্লুত হয়ে” বিনাশ কালে বিপরীত বুদ্ধি” দিয়ে তাঁদের বললাম ভাই পূজো হবে। তবে ওতো বড় নয় একেবারে ছোট্ট করে, ঐ আর কি কোনো রকমে যাকে বলে ” ধরি মাছ না ছুঁই পানি “ কিছুটা সেরকম। টাকাও পাবে তবে তুলনামূলক ভাবে কম। বুঝতেই তো পারছো?
Public gathering only pain , in Durga puja
আর্থিক লোভ কে ছাড়ে? তাঁরা তো দলে দলে আসবেনই তাঁদের প্যান্ডেল শিল্পে কৃতি দেখাতে। সঙ্গে ঢাকির দল ও আসবে, যাবার সময় কি নিয়ে যাবেন তাঁরা সামান্য কটা টাকা নাকি ব্যাগ ভর্তি মৃত্যু কোরোনা অজান্তেই? আর কি আশা হবে পরের বছর সেটা তাঁদের বাড়িতে গিয়ে কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন দিন কয়েক পরে গিয়ে ।
এবারে বলি কি, হে কর্তৃপক্ষ আপনাকে বলছি যাঁরা পূজো করছেন বলটা একটু মুহূর্তের জন্য আপনার কোর্টে রাখবেন? একটু গভীর ভাবে চিন্তা করুন তো , কি ক্ষতিই না করে ফেললেন। পারতেন না কি, যে পরিমান টাকা প্রতিবছর তোলেন সেটা যদি এঁদের কে তুলে দিতেন।একেবারে নির্দ্বিধায়। তাহলে তো মানুষ গুলো আরও বেশি করে বাঁচতো তাই না?
Durga puja pandel
আর বাঁচতো ভিড় করা দর্শনার্থীরা যাঁরা এখনো ভাবছেন। ও আমার কিছু হবে না ঠাকুর দেখতে গেলে ।একটা পরিসংখ্যান বলি দিন পনেরোর আগের এক লক্ষ চল্লিশ হাজার কোটি টাকা টাকার মাদক ধরা পড়েছে সারাটা দেশ জুড়ে।
এই বিপুল পরিমান অর্থ কি দেশের GDP কে একটু হলেও চাঙ্গা করতো না? কিন্তু ধরেই নিয়েছি ওটা আমার ভাবার বিষয় নয় সরকার ভাববেন। দুর্গোপূজো এসেছে, IPL চলছে এখন ওসব নিয়ে মেতে থাকুন তো বাপু, “খাচ্ছি দাচ্ছি মরিব দুঃখে ” যা হবার তা দেখা যাবে। বাজারে দ্রব্যমূল্য দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। অন্তত লোকগুলো কে যদি মাসোহারা কিনে দেন আগামী ছ থেকে সাত মাসের জন্য ধার্য টাকা পয়সা ছাড়া তাহলেও তো সেটা তাঁদের উপকারে লাগে ।
Result after Durgapuja
কারণ এই অর্থ টা তাঁদের শেষ হয়ে যাবে নিমেষেই নিজস্ব ট্রিটমেন্ট করাতে।কেউ ভাববেন প্রয়োজনে 250 গ্রাম আলু কিনবো সাড়া সপ্তাহ জুড়ে, তা চালিয়ে নেবো কোনো ভাবে।পূজো পার্বনে তো আগে মাতি? আমাদের মাথা গুলো ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে একেবারে U টার্ন করে।টের টি তো পাওয়া যাবে ঠিক পনেরো থেকে কুড়িদিন পর থেকে। পশ্চিমবঙ্গের কোরোনার পরিসংখ্যান টা তো তখনই পাল্টে যাবে নির্বিশেষে।
কেরালা থেকে গোটা দেশ শিক্ষা নিয়েছিল মাস পাচেক আগেও কি করে কোরোনা মুক্ত থাকা যায়। তাতে সারা রাজ্য তাঁদের বাহবা দিয়েছিলো। আবার এই কেরালায় ওনাম উৎসবে মেতে উঠে সে শিক্ষা ও দিয়েছে গোটা দেশবাসীকে তাঁদের ভুলের নজির হিসেবে।
যাঁরা কোনো ধরণের কোনো কিছুকেই তোয়াক্কা না করে বেড়িয়েই পড়েছেন দ্বিতীয়ার দিনে বাচ্চাকে কাঁধে নিয়ে প্রতি বর্গমিটারে জনা দশ বারো তো বটেই, এটা হয়তো বলবো তাঁদের দোষ নয় প্রত্যক্ষ ভাবে। একবার ভিড় থেকে বেরিয়ে আশা কোনো দর্শনার্থীকে জিজ্ঞাসা করুন তো “কেমন লাগলো দাদা?
How far justified Durga puja 2020
সহাস্য বদনে বলবেন দারুন তবে আগের বছরের মত অতটা ভালো নয়। তাও আর কি দেখতে পেলাম মাকে চোখের দেখা এটা কি কম ভাগ্যের ব্যাপার । আর নতুন জামা কাপড় নইলে পড়াই হতো না।“ ভাবছেন নতুন জামা কাপড়ে আবার underline কেন দিলাম তাইতো?
এ আবার কোন এক বিশেষণ নাকি?একেবারে জোর গলায়, হলফ করে, অত্যন্ত বিশ্বাসের সাথে বলছি।মানুষের সেন্টিমেন্ট নিয়ে জানিনা অনেকে একমত হবেন কিনা। শতকরা আশি শতাংশ মানুষ নতুন কাপড়ের মায়ায় সেটা না ধুয়ে,একটু বেশি করে স্যানিটাইজার ফুঁস ফুঁস করে ছড়িয়ে দেবেন। তাও আবার সস্তায় অজস্র বানান ভুল করা স্যানিটাইজার “ life- gard “ নামক রঙিন উপাদান দিয়ে।
Durga puja & Dress Code
কারণ একটাই একবেলা পড়েছি তাও আবার নতুন জামা, খুব বেশি হলে চারঘন্টা।দেখা যাক না টিভি তে দেখি অষ্টমীর দিন কেমন ভিড় হয় অমুক মণ্ডপে, কম হলে না হয় ফাঁকায় ফাঁকায় ঘুরে এসে তারপর ভালো করে ধুয়ে দোবো কি হয়েছে? ” আর বাড়িতে বৃদ্ধ মা বাবা থাকলে তো কথায় নেই।সেটা বুঝবেন ঠিক কয়েকদিন পরে।
মাসটা বোধহয় এপ্রিল মাস মোদীজি বলেছিলেন যে যাঁর বাড়িতে 5.10 মিনিটে ঘন্টা কাঁসর বাজাবেন। ভারতবাসী অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছিলেন সে দিনটি কে। শুধু বাড়িতে থেকে নয় দলবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। ভারতবাসীর মুশকিল হচ্ছে কোনো কিছু যদি ধরতে বলা হয় একেবারে বেঁধে নিয়ে আসেন।
Responsibility of Police in Durga puja
এথেকেও কি শিক্ষা মেলে না আমাদের? গতকাল সেই বহু বিতর্কিত জায়গা শ্রীভূমির পাশ দিয়ে আসছিলাম নিজের গাড়িতে একেবারে গাড়ির কাঁচ বন্ধ করে। গিয়েছিলাম বিশেষ এক কাজে।তাতেও বেশ শিউরে উঠছিলাম ভিড় দেখে।আর কষ্ট হচ্ছিলো প্রশাসন ও পুলিশের তৎপরতা দেখে।
এই ধরুন পূজো না হলে তো মানুষ আসতো না দেখতে। পুলিশ কেউ এত হেনস্থা হতে হতো না। যদিও বেশ কিছু পুজো কর্তৃপক্ষ তাঁদের মতামত জানিয়েছেন যে তাঁরা পূজো করবেন কিন্ত একেবারে সেখানে স্থানীয় লোকেদের প্রবেশ ছাড়া বাইরের লোকেদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।
Durga puja festive mood
সাধুবাদ জানায় তাঁদের কে এই ধরণের মত পোষণের জন্য।মজার ব্যাপার কি জানেন? দুই ধরণের মানুষ ও আছেন যাঁরা মজা দেখতে বেরোবেন। প্রথম ধরণের মানুষ হোলো, যাই না,বলছে ঠিকই,কিন্তু সাইড দিয়ে কোনোরকমে ঠিকই ম্যানেজ করে ঢুকে পড়বো। আর দ্বিতীয় জন হোলো “ শুনছি তো ছোটো করেছে, একটু দেখেই আসি, তেমন তো ভিড় হবে না, কেউ যাবেই না দেখতে। এ যেন পূর্ব কোনো বিজ্ঞাপনের সেই “নবাব ” কিনতে বেড়িয়েছেন। মনে পড়ে।
” নবাব কিনলে আরাম ফ্রি, শুনছি বলছে দিচ্ছে কি, আমিও ফ্রি তুমিও ফ্রি “
একটা অভিজ্ঞতা তো হবে গতবছর আর এবছরের। আপনার মত একই কথা ভাববেন আরেকজন তাতেই ভিড় আর তাতেই ভয়।কোনো ভাবে যেতে পারলেই তো হোলো ফেইসবুক তো আছেই আমিই হবো প্রথম সাংবাদিক যে দেখে এসেই আপলোড করবো আর বাহবা কুড়োবো।
এসেই বলবো “যা যা ঘুরে আয় এত ভয় পেলে চলে নাকি? যেখানে সবই খোলা ভয় পাচ্ছিস কেন ” একটা ঘটনা বলি ঠিক সপ্তাহ খানেক আগের কথা আমার মেয়ের শিক্ষক তাঁর বোন হঠাৎ করে শ্বাস কষ্ট শুরু হয়। বয়সটা পঞ্চাশের মধ্যেই কোনো রকমের কোনো পূর্ব উপসর্গ ছিল না ভদ্র মহিলাটির। যাক তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় সাগর দত্ত হাসপাতালে সেখানে জায়গা না পাওয়ায় তাঁকে নিয়ে যান R G kar এ। অক্সিজেন দেওয়াতে সুস্থ ও হয়ে ওঠেন উনি, এদিকে করোনা নেগেটিভ।
ভদ্রমহিলা রীতিমতো কথাও বললেন ভায়ের সাথে, বিকেলে ছেড়ে দেবেন ডাক্তার বলেছেন । ভাই যথারীতি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা ও হোন। পথে খবর আসে বোন মারা গেছেন। কোনো ভাবেই অঙ্কটা মেলাতে পারেননি সেই মাস্টারমশায়।আসল কথাটা হোলো ডাক্তারেরা কোরোনা রুগীদের নিয়ে এতই ব্যস্ত যে অন্য কোনো দিকে মাথাও দিতে পারছেন না। তাঁদের পরিশ্রম চলেই চলেছে সেই মার্চ মাস থেকে।
Social distance quite impossible in Durgapuja
আপনি বের হলে কার কার ক্ষেত্রে অসুবিধের সৃষ্টি করছেন একবার ভাবুন –
1. প্রত্যক্ষ ভাবে আপনার পরিবারও সেক্ষেত্রে রেহাই পাবে না পুরোদস্তুর।
2. আপনার পাড়ার ক্ষেত্রে, আপনার ধারে কাছে কেউ হয়তো ঘেষবেন না, আপনার এ রোগ হলে। চাচা আপন প্রাণ বাঁচা।
3. পরোক্ষ ভাবে রাস্তায় যানজট তাতে প্রশাসন ও আক্রান্ত হবেন।
4. প্রতি একটা মানুষ থেকে দশজন মানুষ আক্রান্ত হন তাই যিনি পূজো দেখতে এসে ছড়াচ্ছেন উনি একটা radio active element হিসেবে কাজ করবেন অন্যের ক্ষেত্রে।
5. আপনি বেরোবেন বলে PWD তটস্থ রাস্তা মেরামতির কাজে। প্রতি বছর দেখবেন রাস্তা মেরামতির একটা হিড়িক থাকে ঠিক পুজোর আগের মাস থেকে। তাই প্রত্যেক জায়গায় একটা জ্যাম জট এখন থেকেই শুরু, পুজোটা না হলে এটা তো আর হতো না। যত বেশি জ্যাম তত বেশি মানুষের আধিক্য আর ততই সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি।
6. আপনি ভাবছেন আপনার mediclaim আছে যাই হোক পার পেয়ে যাবেন তাই না? কিন্তু কে দেখবেন আপনাকে? আপনার মত শতাধিক বা তারও বেশি ভর্তি আছে সরকারী হাসপাতালে মাটিতে শুয়ে। নভেম্বর থেকে দ্বিগুন বা তিনগুন হবে না এটা আশ্চর্যের কিছু নয়। বেসরকারিতে নেবে আপনার mediclaim আছে যেহেতু, কিন্ত ডাক্তার কি পাবেন সেখানে।
একেকজন ডাক্তার কি পরিশ্রমই না করে চলেছেন দিন রাত। একটু তো ভাবুন আপনার আনন্দ ডাক্তারদের ছুটি বাদ পড়বে। আপনি কি স্বার্থপরের মত কাজ করছেন না, নাকি ধরেই নিয়েছেন এবছরই আপনার শেষ পূজো? সেটাও কিন্ত হতে পারে জানেন, খুব একটা খারাপ বলছি না, অন্তত বুদ্ধিজীবীদের পরিসংখ্যান তাই বলছে।
Doctors advise during durga puja
7. একটা তথ্য দি আপনাদের কে আমার বাড়ির ঠিক কাছেই zenith hospital তাঁরই কর্ণধার Dr. Narayan Banerjee কিছুদিন আগে উনার ঠিক এই একই রোগ হয়েছিল, কি বলছেন উনি আপনারা নিজেই শুনুন –
ডক্টর নারায়ণ ব্যানার্জী র বক্তব্য…
উপলব্ধি
“ ২২ তারিখ সকাল থেকেই শরীরে একটা অন্যরকম অস্বস্তি। বিগত ৬ মাসে কয়েকবার গলা ব্যথা, হাল্কা জ্বর বা মাথাব্যথা হলেও সেরকম গুরুত্ব দেই নি, কিন্তু সেদিন যেন ২ পা হাঁটতেই কষ্ট হচ্ছিল ।জেনিথ এ জরুরি কাজ সেরে সকালে অ্যাপোলো র চেম্বার করার সময় বুঝলাম বেশ জ্বর। প্যারাসিটামল আগেই খেয়ে নিয়েছিলাম।একটু পরে বাধ্য হলাম পেশেন্ট দেখা বন্ধ করে বাড়ীর পথে রওনা দিতে।
ঘুমানোর চেষ্টা করলাম, ভাবলাম বিশ্রাম নিলেই ফিট হয়ে যাব।কোথায় কি? শুয়ে আরও সমস্যা। এপাশ ওপাশ করতে করতে হঠাৎ মনে হল ধপাস হলাম না কি?তড়িঘড়ি পাল্স অক্সিমিটার টা বের করে আঙুলে লাগালাম.. ৯৫%, অন্য আঙুল.. ৯৪%, অন্য হাত..৯৪%। লম্বা শ্বাস.. ৯৪%।একটু হেঁটে প্রমান করতে গেলাম সব ঠিক আছে।বুকের অস্বস্তি গেল বেড়ে।দোনামনা করতে করতে রাত সাড়ে বারোটায় সিটি স্ক্যান করালাম।
৬ মাস ধরে যে মেশিন আমাকে অসম্ভব সাহায্য করেছে কোভিড পেশেন্ট দের চিকিৎসা করতে, জানিয়ে দিল বিস্তর গোলোযোগ রয়েছে।তখনই সোজা অ্যাপোলো হসপিটাল ।ঘন্টা তিনেকের মধ্যে অ্যাডমিশন, টেস্ট আর ওষুধ।৬ দিন হাসপাতালের আধুনিক চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ।আজ ১৫/১৬ দিন অতিক্রান্ত, ১ ঘন্টা টানা কোন কাজ করতেও অসম্ভব ক্লান্তি লাগে।বলছিলাম কি, পুজোর বাজার করবেন, প্রতিমা দর্শন করবেন একটা জিনিষ মাথায় রেখে..
প্রোজেকশন বলছে অক্টোবর ২০ থেকে নভেম্বর মাস সংক্রমন মাত্রা ছাড়াতে চলেছে। অন্তত কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলা গুলিতে।বেড বাড়ন্ত, স্বাস্থ্যকর্মীরাও ক্লান্ত।সকলের প্রতি মা দূর্গা প্রসন্ন হবেন, এমন তো নাও হতে পারে।রতন টাটা কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, এ বছর বেঁচে থাকাটাই বড় লাভ।
কে যেন বহুকাল আগে বলেছিলেন, মানুষ আপনার ভাগ্য আপনি রচনা করে।শেষ করব মা এর একটা কথা দিয়ে, নিজের ভাল পাগলেও বোঝে। From Dr Narayan Banerjee’s wall?” (Collected and sent for consideration by my friends)(Dr. Banerji is a renowned physician).
8. এরপরেও যদি তোয়াক্কা না করে ভাবেন “ লোকে বলে বলুক মন্দ তাতে ক্ষতি নাই, এই করিম কয় তোমার কাছে মায়া যদি পাই ” করিম তো ঈশ্বরের কাছে মায়া চাইছেন, কিন্তু মা দূর্গা কত জনের সে মায়ার কথা শুনবেন। কেউ না কেউ তো বঞ্চিত হবেন ই সেই কৃপা থেকে কি বলেন আপনারা? হতে পারেন আমি বা আপনি নিজে সে মায়া বা কৃপা থেকে দূরে থাকবো ?
9. আপনার আনন্দ অন্য কারোর দুঃখের কারণ হবে এটা হয়তো চাইবেন না নিশ্চয়।
10. মার্জনা করবেন উপরে লেখা কোনো উক্তি বা কথা কোনো ধরণের রাজনৈতিক দলকে ঠেস পৌঁছানোর জন্য কখনোই নয়। আমি একজন অতি সাধারণ মানুষ। শুধু নিজের একটা বক্তব্য পেশ করলাম আপনাদের কাছে।
আমার নিজস্ব লেখা কবিতা
দুগ্গা মায়ের জয়
রংবাহারি সাজ পোশাক, আমাদের মুখে কেন নেই ভাত,
ফিবছর ঘুরি প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে, এ বছর তাও এতটুকু না মেলে।
ষষ্ঠীতে মা তোমার বোধন, সপ্তমীতে নবপত্রিকার বাঁধন,
পোশাক বলতে ছেঁড়া সে সাজ,
কোথায় পাবো এ বছরে আজ।
আমাদের কথা কতই লোকে বলে, কাছে গেলেই সব দূরে যায় চলে,
অষ্টমীতে উপোসি অঞ্জলি, খিদেতে দুভায়ের পেট যায় জ্বলি।
নবমী দশমী তোমার আক্ষেপ, আমাদের উপোস প্রতি পদক্ষেপ।
কুড়াদান সে তো তাও ভালো, কপালে জোটেনি সে উচ্ছিষ্ট গুলোও।
সাতদিন দেখি থেকো উপোস করে, ইষ্টদেবতা তাকাবেন ও না ঘুরে,
যেসব তোমরা সমানে করো শখে, আমরা হাসি কেবল তোমাদেরই দেখে।