BIOGRAPHY

BMV-15 BIKI, A SPECIAL CHILD, MENTALLY & PHYSICALLY RETARDED,

Biki

God might have a very Special plan for Biki, special children are always under the special care of Almighty.

শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কখনোই প্রতিবন্ধী হতে পারে না মানুষের।আজ বলবো এমন একজন বাচ্চার কথা যে জন্ম থেকেই অসুস্থ, এক অসম্পূর্ণ সন্তান।মানসিক, শারীরিক, বাক শক্তিতে, ও দৈহিক গঠনেও। এককথায় “হাটের হাঁড়ি ভাঙবো”, তাও আবার নিজের অত্যন্ত কাছের কারোর । প্রসঙ্গত বলি সে আর কেউ নয় আমারই একমাত্র শ্যালক বিকি, ভালো নাম সায়ন রায়চৌধুরী। থাকে বারাকপুরে।

উপরের ছবিতে যাকে দেখছেন সে হোলো এখনের বিকি, ছবি দেখে কিছুই বোঝার উপায় নেই মনে হবে সে আর পাঁচটা ছেলেদের মত স্বাভাবিক। জীবনে মনের অত্যন্ত গভীরের স্বপ্ন তারকা হবে, আর স্বপ্নের নায়ক সলমান খান।নিজেকে মনে মনে গড়ে তুলেছে সেই দিকে একটু কথা বললেই বোঝা যায়।

পুরোমাত্রায় সারল্যে ভরপুর ছেলেটার মধ্যে,বয়স এই মুহূর্তে প্রায় পঁচিশের কাছাকাছি।জন্ম 1995 সালে 30শে জুলাই। শখ বাইক, কিন্ত শারীরিক প্রতিবন্ধকতা এমনই কিছুদিন যাবৎ সেই শখ শিকেয় তুলে রেখেছে। মনের নতুন স্বপ্ন আগামীতে LAND ROVER, PORCHE, LAMBORGHINI বা BMW মত গাড়ি হাসিল করা।আর সারথি হবে তারই জামাইবাবু অর্থাৎ আমি নিজে যাকে সে বিশ্বাস করে মনে প্রাণে।

2000 সালে আমার বিয়ে হয়, বিকি তখন কোলে। বিয়ের আগের থেকেই একটা সংশয় ছিল মনে, office collegue সকলে আমায় বলতো তোর এত ছোটো শালা, খারাপ লাগতো। যেহেতু সম্বন্ধ করে বিয়ে তাই জানারও উপায় ছিল না।ঠিক দ্বিরাগমনে যাওয়ার আগে এক শপিং মলের সামনে আমার স্ত্রী তার ভায়ের কথা বলে কোনোকিছুই গোপন না করে, বিকি তার নিজের ভাই নয় । শুনে অবাক হলাম।

Real story of Biki, since birth he was orphan

বিকি হোলো আমার স্ত্রীর মাসির ছেলে, এক কথায় বলতে সে premature baby। জন্মের থেকেই সে শারীরিক নানান খামতি নিয়ে জন্মেছে। দুটো পায়ের পাতা উল্টো, ঘাড়টা বেশ মোটা ও ছোটো, মাথাটা শরীরের তুলনায় বড়। কথাবার্তা পরিষ্কার নয়, বুদ্ধির বিকাশ নেই বললেই চলে।বিকির বাবা এই সন্তানকে মেনে নিতে পারেননি তাই তার মায়ের সাথে বিবাদ।

আর ঝগড়া বিবাদ এতটাই প্রখর হতে শুরু করে, বিকি যখন প্রায় ছয় মাস তার মা আত্মঘাতী হন। মারা যাওয়ার ঘন্টা ছয়েক আগে এই বিকিকে আমার শাশুড়ির হাতে তুলে বলেন “দিদি পারিস তো ওকে মানুষ করিস” তখন থেকেই বিকি, আমার স্ত্রীর নিজের ভাই হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠে। বিকির নিজের বাবা কোনোদিন খোঁজখবর ও নেই নি বিকির সম্বন্ধে, উল্টো নতুন করে সংসার বাঁধেন।

বিকির যখন প্রায় একবছর বয়স তখন তার পায়ের সাফল্যের সাথে অস্ত্রোপচার হয়। কিন্ত পায়ের পাতা সাধারণের মত মাটিতে ঠেকে না আকারে অনেকটা নৌকাকৃতি ও সরু।

Funny moments of Biki when he was a kid

বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতে বসে সবাই একসাথে বিয়ের ক্যাসেট দেখছি, বিকি ও দেখছে। ক্যাসেটে মেয়ে বিদায়ের পালার সময়ের জায়গাটা যখন এসেছে, বাড়ির সকলের চোখেমুখে একটা ছল ছল ভাব। অমনি দেখি বিকি আমার শ্যালিকাকে কিছু না বোঝার আগেই ঠাস করে সজোরে একটা থাপ্পড় লাগিয়ে দিল। কারণ জানতে চাইলে সে আদো আদো ভাষায় বলে “বিয়ে বাড়িতে আমাকে খালি গায়ে রেখেছিস কেন”?

দেখে অবাক হলেও সেদিন ভেবেছিলাম, তার মস্তিস্ক অনেক সময় যুক্তিযুক্ত কথা বলে। নিজেকে প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখে সে, হয়তো এই বয়সে অনেক বাচ্চাই এতটা ভাবতেই পারে না, আত্মবোধ এতখানি প্রখর।

Study got muddy -in life

ছোটো থেকে সে পড়াশুনো করে খুবই মন দিয়ে কিন্ত মনে রাখতে পারেনা কিছুই। যা পড়ে পরোক্ষনেই ভুলে যায় । একই পড়া প্রতিদিন পড়ে কিন্তু পড়তে বসলে মনে হয় আজই নতুন পড়ছে। এভাবেই চলে তার ব্যক্তিগত জীবন,তবে শিক্ষকদের ভালোবাসা ও সহানুভূতিতে কোনোভাবে সে ক্লাস টেন পর্যন্ত পড়াশোনা করে।

মাধ্যমিক পাশ করতে পারেনি, মনের ইচ্ছে প্রবল, কিন্ত অঙ্ক তাকে জীবনের হিসেবের অংকে ফেল করিয়ে দিয়েছে বাস্তবের কাছে।যেখানে মস্তিস্ক হিসেবের কাছে হার মেনেছে সেখানে কোনো শিক্ষকই তাকে জেতাতে পারে না।অগত্যা বিকি কোনো উপায় না দেখে রোজগারের ছন্দে ফিরে যায়, হয়তো বা বেলাশেষে ভাবে করবে টা কি?

Second funny moment of Biki when he became adult

Biki in a Dabang style

দ্বিতীয় ঘটনাটা বেশ মজাদার বছর দুয়েক আগের ঘটনা বিকি তখন বাইশ কি তেইশ বছর হবে। আমার শ্বশুরবাড়িতে সেদিন অনেকে আসবেন নিমন্ত্রিত হিসেবে আমরাও যাবো। শ্বশুরমশায় বিকিকে টাকাপয়সা হিসেব করে আড়াই কিলো মাংস বাজার থেকে আনতে পাঠায় দোকানদারও বিকির পরিচিত।

বিকির একটাই মুশকিল, কোথাও কোনো কাজে পাঠালে রাস্তায় কোনো পরিচিত লোকের সাথে দেখা হলেই এত কথা বলে সেধে সেধে যে, কি উদ্দেশ্যে সে বাড়ির থেকে বেরিয়েছে সেটাই ভুলে যায় ।যাক মাংসের দোকানে তো গেছে, সেখানে গিয়ে বলে কাকু পঁচিশ কেজি মাংস দাও, বাড়িতে আজ অনেক লোকজন আসবে। দোকানি কিছুটা আনন্দিত হলেও সে শ্বশুরমশায়কে ফোন করে পরিমান টা যে ভুল সেটা যাচাই করে ফেলে। কারণ উনিও জানতেন বিকি এমনই।

Dinesh Trivedi former Railway Minister,with whom Biki met

Dinesh Trivedi

আমার শ্বশুর বাড়ির খুবই ঢিলছোড়া দূরত্বে দীনেশ ত্রিবেদীর বাড়ি। সে একদিন বাড়ির কাউকে না বলে হঠাৎ করে বেরিয়ে পরে তাঁর সাথে দেখা করতে বয়স তখন প্রায় কুড়ির কাছাকাছি। মন্ত্রী মানুষ, দেখা করবেনই বা কেন, অবশেষে তাঁর পারিষদ বর্গকে বিকি বলে “আমি দীনেশ কাকুর সাথে দেখা করতে চাই প্রয়োজনে তাঁকেই সব কথা বলবো”। তার এই কাকু সম্মোধন কিছুটা হলেও তাঁদের বিচলিত করে।

একদিন তাকে সময় নিয়ে ডাকে আর বিকি তার জীবনের সব কষ্টের কথা উগলে দেয় তার দেওয়া নাম “দীনেশ কাকুকে”। উনি একটাই আশ্বাস এর স্বপ্ন দেখান তুমি তোমার প্রতিবন্ধী কার্ডের ব্যবস্থা করো, বাকিটা পরে এসো কিছুটা হলেও একটা ব্যবস্থা যদি করা যায়। বিকি পরবর্তীকালে আর যায় নি কারণ সে নিজেও জানে তার সীমাবদ্ধতা। রেলে কোনোভাবে চাকরি পেলেও সে পারবে না সেটাকে আগলে রাখতে।

সেদিন তার মন একটাই কথা বলেছিলো যা অন্যেরা পারে না এত বড় মানুষটার সাথে দেখা করতে সেটা বিকি পারে এখানেই তার জীবনের জয়। “সুবিধে পেলেই যে নিতে হয় সেটা নিষ্প্রয়োজন, প্রয়োজনে সেটাকে আগলে রাখতে হয়, হয়তো বা আগামীতে”।

Friendship with class fellow

স্কুলের বন্ধুদের সাথে দীর্ঘদিন হয়েছে আর সম্পর্ক নেই মাঝে মাঝে দেখা হয়। নিজেকে অনেকটাই গুটিয়ে ফেলেছে মন ঠিক মানে না। “কি করে দেখা করি তারা সবাই আজ উঁচু ক্লাসে উঠে গেছে, আমি আজও একই জায়গায় আছি, তবে হ্যাঁ একদিন এগোবোই এগোবো ওদের থেকে”।

এটা যেন মনে একটা দৃঢ সংকল্প নিয়ে ফেলেছে সে। রাস্তাঘাটে যখনই দেখা হয় অল্পবিস্তর বন্ধুদের সাথে কথা বলে বাড়ি ফিরে আসে। সন্ধ্যে নামার আগেই সন্ধ্যে দিতে হবে এটা তার মনের একটা শিক্ষা, আর অদেখা এক শক্তির কাছে নিজেকে উৎসর্গ করে দেওয়া আগামী জীবনের দীক্ষা “আমার জীবনের লক্ষ্য, রোজগার করা,হে প্রভু, শুধুই তুমি, তোমাতেই উৎসর্গ আমি আমার জীবন”।

Salesmanship in a garments shop…

একদিন সে ছুটতে ছুটতে এসে বলে একটা পোশাকের দোকানে চাকরি পেয়েছে, মোটা টাকার মাইনা দেবে আর সামনে পূজো তাই অধিকন্তু বোনাস দেবে। মাইনে কত দেবে বলেছিলো সেটা বিকির মনে নেই কারণ স্মৃতিশক্তি এতটাই দুর্বল। সকাল 9.30 থেকে দুপুর দুটো আর বিকেল চারটের থেকে রাত এগারোটা।

কথাটা শুনে অবাক হয়েছিলাম আর ভেবেছিলাম এটা ঠিক বিকির কাজের জায়গা নয় কিন্তু প্রয়োজন ও আছে। কামারের কাছে লোহা যত গরম ও পেটায় হবে ততই সে ধারালো দাঁ হবে। ঘাত প্রতিঘাত না আসলে জীবনের সিদ্ধান্তটা মজবুত হবে কি করে।একদিন শ্বশুর মশায় দেখতে যান কোন দোকানে সে কাজ করে, দূর থেকে দেখেন বিকি সেই দোকানের বাইরে টা ঝাড় দিচ্ছে, উনি অবাক হলেন।বাড়িতে আসতেই বিকি কে কাজে যেতে না করেন।

বিকি নিজেও মনস্থ করে ঠিক আছে যাবো না, সেদিন একটাই কথা বলেছিলো সে আজও মনে ধরে “এ কাজ আমার সারাজীবনের নয় বাবা, আমি তো ধাক্কা খাচ্ছি, লোকে আমায় ঠকাচ্ছে, পড়াশুনোয় মাথা নেই ঠিকই কিন্তু এই শিক্ষাটা পেতে দাও, তবেই আর কেউ আমাকে ভুল পথের সুযোগ নিতে পারবে না আগামী জীবনে।

দোকানের কর্তৃপক্ষ এসেছিলো তবে কথা রাখেনি তাঁদের চুক্তির টাকাতে দিতে। যৎ সামান্য দিয়েছিলো এভাবেই বিকির মত কত বিকি শুধুই মানুষের উপকারে এসেছে, আর পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়েছে এক প্রতারণার ঝুলি।

Painting could ba a new stepping stone

বছর চারেক আগের ঘটনা যখনই যেতাম আমায় দেখাতো তার হাতে আঁকা ছবি। উৎসাহ দিতাম এত বড় ছেলে নিশ্চয় সে পারবে ভালো আঁকতে।কিন্তু আঁকা এতই নিম্নমানের ছিল যেটা দেখে খারাপ লাগতো তখন।একটা কুড়ি বছরের ছেলে আমাকে সামান্য একটা পাখির ছবি এঁকে দেখাতে একটু অবাক হয়েছিলাম পাখির ডানা পর্যন্ত ঠিক আঁকা হয়ে ওঠেনি। সেদিন মনে মনে খুবই কষ্ট হয়েছিল যে জিনিস নিয়ে সে স্বপ্ন দেখছে হয়তো এখানেও তার বিফলতা।

চেষ্টা আর নিরন্তর প্রয়াস একটা মানুষকে সংকল্পের সেই শীর্ষে নিয়ে যায় , যেটা সে মনে মনে দিবা স্বপ্ন দেখে।বিকি পুরোপুরি আঁকার দুনিয়ায় নিজেকে পাল্টে ফেলেছে ঘষামাজা করে।ভাবতে অবাক লাগে, বিশ্বাসই হয় না, বহুদিন আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি আদৌ কি সে এই ধরণের আঁকা আঁকতে পারে।

আমাকে তার নিজের হাতে বানানো একটা portrait দিয়ে চমক লাগিয়ে দেয় । স্বপ্নটা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি, হাতছানি দিচ্ছে আরো আরো বড় কিছু করার, হয়তো লুকিয়ে আছে সেটা মনের অনেক গভীরে।

Gifted by Biki

Teacher in a Art class

তার এই আঁকা সামান্য দিনে এতটাই সাফল্য এনে দেয় এখন সে শিক্ষক এক আর্ট স্কুলের। নিজেও কিছু টিউশন করে বাচ্চাদের আঁকা শেখায়। এমনও কিছু অভিভাবক আছেন যাঁরা গুরু দ্রোণাচার্যকে উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেন না। এটাই বিকির কষ্ট আর দিলেও এতই কম, ঠকিয়ে দেন দেওয়ার সময় কারণ বিকি এখনো এই বয়সে এসেও টাকাপয়সা ঠিক গুনতে পারে না বা হিসেব বোঝে না।

A Bullet Train should be in a proper track….

বিকির ছন্দে ফিরতে হয়তো এখনো আরো সময় লাগবে তা বেশ কিছুদিন।এখন সে আনুমানিক হাজার আষ্টেক টাকা রোজগার করে টিউশন ও নিজের হাতে বানানো নানান মৃতশিল্পের কাজ করে। যে ছেলেটা একটা সময় কিছুই করার স্বপ্ন দেখেনি, কোনো একটা শক্তি তো আছেই যে তাকে টেনে ওঠাতে চাইছে অনেক উপরে।রোজকার শারীরিক অনুশীলন, বজরং বলির এখনিষ্ট ভক্ত, আর বিকেলের সান্ধ্য প্রদীপ -আলো জেলে দেবে আগামীতে বিকির জীবনে।

আগামী দিনে সে বুলেট ট্রেন নিয়ে সবাইকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে, BMW বা LAMBORGHINI নিয়ে স্বপ্নের দেশে “হুর দাবাং দাবাং গানে” মাতিয়ে দিয়ে। আর সঙ্গে স্বপ্নের নারী শ্যামলী কে নিয়ে দূর দেশে পাড়ি দেবে।মানুষ সমস্তটাই পারে শুধু অপেক্ষা আর নিরন্তর প্রয়াস যা তার চিন্তাশক্তির বাইরে ও নিয়ে যেতে পারে যা সে নিজেও কোনোদিন ভাবেনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *